কাপাসিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস ২০২৫ পালিত

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ৮ অক্টোবর বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিপুল সংখ্যক কিশোরীর অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
“আমি কন্যা শিশু, স্বপ্ন গড়ি, সাহসে লড়ি, দেশের কল্যাণে কাজ করি”— এবছরের এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে দেশব্যাপী একযোগে দিবসটি পালিত হয়। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের উদ্যোগে সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডা. তামান্না তাসনীম সভাপতিত্ব করেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ১
বিআরডিবি কর্মকর্তা দিলারা আক্তার মনি ফকিরের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাহিদুল হক, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসী, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মাওলানা শেফাউল হক, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ. এম. কামাল হোসেন, উপজেলা নির্বাচন অফিসার তামান্না রশিদ, উপজেলা শিক্ষা অফিসার রমিতা ইসলাম, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রহিমা খাতুন, ইসলামী ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার আবু সাঈদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের নেতা রাশেদ রবি, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রত্না আক্তার, তথ্যসেবা কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমান নারী অধিকারের যুগে, সুশাসনের ও মানবাধিকারের যুগে কন্যা সন্তানের প্রতি অবহেলা আগের তুলনায় অনেক কমলেও তা যে একেবারে নেই, তা বলা যাবে না। এ ধরনের মানসিকতা এখনো আমাদের সমাজ থেকে পুরোপুরি দূর হয়নি। ক্ষেত্রবিশেষে কন্যা সন্তানের প্রতি আগ্রহ বাড়লেও সামাজিকভাবে কন্যা সন্তানের অভিভাবকরা কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে থাকেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে উৎপাদনশীল করতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে: ড. মঈন খান
বিশ্বজুড়ে নারী ও কন্যা শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও নৃশংসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ শিশু, যাদের বয়স আঠারো বছরের কম। আর শিশুদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ কন্যা শিশু, যাদের পিছনে রেখে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
কন্যা-জায়া-জননীর বাইরেও কন্যা শিশুর বৃহৎ জগত রয়েছে। স্বাধীনভাবে নিজের মতামত ব্যক্ত করা ছাড়াও পরিবার, সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের প্রকৃত ক্ষমতায়ন করা সম্ভব। এজন্য কন্যা শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তাসহ বেড়ে ওঠার সব অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
বাল্যবিবাহ নারীর ক্ষমতায়নের প্রধানতম অন্তরায় এবং আমাদের সমাজ এখনো কন্যা শিশুদের বোঝা মনে করে। কন্যা শিশুদের পড়াশোনার পেছনে টাকা খরচ করতে চায় না। তারা মনে করে বিয়ে দিতে পারলে বোঝা দূর হয়ে গেল। তবে সময় অনেক বদলেছে। কন্যা শিশুরা এখন আর বোঝা নয়, বরং কন্যা শিশুরা হলো সর্বোত্তম বিনিয়োগ ও সমাজের আলোকবর্তিকা।