বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের আহ্বান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শিক্ষকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটি একই সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কারের লক্ষ্যে অবিলম্বে “শিক্ষা সংস্কার কমিশন” গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “মানুষ গড়ার কারিগর” শিক্ষকরাই সমাজ গঠনের প্রকৃত চালিকাশক্তি। ১৯৯৪ সাল থেকে ইউনেসকো ঘোষিত এ দিবসটি বিশ্বজুড়ে শিক্ষকদের প্রতি সম্মান জানাতে পালিত হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: চাকসুতে পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে জনপ্রিয়তার শীর্ষে জাবেদ
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “ফ্যাসিবাদ-মুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সেই আন্দোলনে শিক্ষকরাও ছিলেন অন্যতম অংশীদার। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনের সময়ে যখন দেশজুড়ে ছাত্র হত্যার মহোৎসব চলছিল, তখন কিছু ন্যায়পরায়ণ শিক্ষক, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের শিক্ষক সাহসের সঙ্গে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।”
তাঁরা আরও বলেন, “এই শিক্ষকরাই প্রমাণ করেছেন, শিক্ষকতা কেবল পেশা নয়, এটি বিবেক, মানবতা ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থানের এক মহৎ অঙ্গীকার।” বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতে, এ সাহসী ভূমিকা ভবিষ্যতের ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন: জুলাই পরবর্তী ছাত্ররাজনীতির মডেল ছাত্রশিবির : সাদিক কায়েম
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দীর্ঘ দেড় দশকের আওয়ামী লীগ আমলে শিক্ষাক্ষেত্রে দলীয়করণ, পক্ষপাত, স্বজনপ্রীতি ও বাণিজ্যিকীকরণ শিক্ষাব্যবস্থাকে গভীর সংকটে ফেলে দেয়। শিক্ষক নিয়োগ, ভর্তি প্রক্রিয়া ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে দলীয় প্রভাব শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশকে ধ্বংস করেছে।
ছাত্র সংগঠনটি মনে করে, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারই ছিল অন্যতম অঙ্গীকার। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। ফলে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এখনো ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, “অভ্যুত্থানোত্তর বাংলাদেশে এখনো শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠিত না হওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, দ্রুত শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করে যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন, শিক্ষকদের মর্যাদা ও স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে।