পুতিনের বাসভবনে হামলার অভিযোগ রাশিয়ার, অস্বীকার ইউক্রেনের
রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ইউক্রেন হামলার চেষ্টা চালিয়েছে এমন অভিযোগ তুলেছে মস্কো। সোমবার এ অভিযোগ করা হলেও এর পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি রাশিয়া। কিয়েভ এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জানিয়েছে, শান্তি আলোচনাকে বাধাগ্রস্ত করতেই এমন দাবি তোলা হচ্ছে। খবর : বিবিসির
পাল্টাপাল্টি এসব অভিযোগ ও উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন করে ধাক্কা লেগেছে। রাশিয়া জানিয়েছে, এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারা শান্তি আলোচনার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে তালেবান সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তার ঢাকা সফর ঘিরে আলোচনা, কৌতুহল
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ দাবি করেন, ইউক্রেন পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালিয়েছে। বাসভবনটি রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় নোভগোরোদ অঞ্চলে অবস্থিত বলে তিনি জানান। পুতিন ওই বাসভবনে ছিলেন কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানায়নি মস্কো।
ল্যাভরভ বলেন, এই হামলার ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা হবে। হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানি হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই হামলার জবাবে রুশ বাহিনী পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ মিশন ঘেরাও করল উগ্রবাদী হিন্দুরা
জেলেনস্কি এই অভিযোগকে ‘রাশিয়ার চিরাচরিত মিথ্যাচার’ বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাওয়ার অজুহাত তৈরি করতেই ক্রেমলিন এ ধরনের গল্প ছড়াচ্ছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এর আগেও রাশিয়া কিয়েভে সরকারি ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, এ মুহূর্তে বিশ্ববাসীর নীরব থাকা বিপজ্জনক। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে দুর্বল করতে রাশিয়াকে আমরা সুযোগ দিতে পারি না।
টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ল্যাভরভ দাবি করেন, পুতিনের বাসভবনের দিকে ছোড়া ৯১টি ড্রোনই রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভূপাতিত করেছে। তিনি বলেন, এতে কোনও হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ল্যাভরভ আরও বলেন, অপরাধী কিয়েভ সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের পথে নেমেছে। এ কারণে রাশিয়ার আলোচনার অবস্থান নতুন করে পর্যালোচনা করা হবে।
তবে তিনি যোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা থেকে রাশিয়া সরে যাবে না।
এই অভিযোগ এসেছে ফ্লোরিডায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পরপরই। ওই বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জেলেনস্কি যুদ্ধ অবসানে একটি সংশোধিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকের পর জেলেনস্কি ফক্স নিউজকে বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে যুদ্ধ শেষ হওয়ার ‘সম্ভাবনা’ রয়েছে। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইউক্রেনের পক্ষে এই যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয়।
জেলেনস্কি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেখেই বোঝা যায়, তিনি খুব কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত পরিস্থিতিকে শান্তির দিকে নিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পুতিন শান্তি চান—এমন কোনও লক্ষণ তিনি দেখছেন না এবং রুশ প্রেসিডেন্টের ওপর তার কোনও আস্থা নেই।
জেলেনস্কির ভাষায়, আমি পুতিনকে বিশ্বাস করি না। তিনি ইউক্রেনের সফলতা চান না।





