এএফডি ও এমআইএসটি এর সেমিনারে সামরিক বিশেষজ্ঞরা

আগামীর যুদ্ধ অস্ত্র নয় একটি ভাইরাল ভিডিও দিয়ে শুরু হতে পারে

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৫:৩৯ অপরাহ্ন, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৫:৩৯ অপরাহ্ন, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (এএফডি) ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) এর যৌথ ব্যবস্থাপনায় Resilience in the Information Domain: Tools to Address Misinformation and Disinformation on Social Media শীর্ষক সেমিনার ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ‘জেনারেল মোস্তাফিজ মাল্টিপারপাস হল’ এমআইএসটিতে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, এনডিসি, পিএসসি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান, বিএসপি, এনডিসি, এইচডিএমসি, পিএসসি, পিএইচডি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সেমিনারে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, মিডিয়া ব্যক্তিবর্গ এবং এমআইএসটি, বিইউপি, মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, বাংলাদেশ-এর ফ্যাকাল্টি ও ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এমআইএসটি’র কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মোঃ নাসিম পারভেজ, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) তাঁর বক্তব্যে, বর্তমান ডিজিটাল যুগে সঠিক তথ্য সুরক্ষিত করতে টেকসই কৌশল অনুসন্ধান, সাইবার সুরক্ষা শক্তিশালীকরণ ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ সমন্বিত পদ্ধতিসমূহ চিহ্নিত করতঃ এর বাস্তবসম্মত প্রয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র জনগণ রুখে দেবে: আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ

প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, এনডিসি, পিএসসি তার বক্তব্যে, অপপ্রচার ও অপতথ্য প্রতিরোধে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন ভবিষ্যতের যুদ্ধ অস্ত্র দিয়ে নয়, বরং একটি ভাইরাল ভিডিও বা বিকৃত তথ্য দিয়ে শুরু হতে পারে। সত্যকে জাতীয় শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আজকের যুগে একটি পোস্ট বা ভাইরাল কনটেন্ট মিসাইলের চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে। তিনি সবাইকে কোন কিছু শেয়ার করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করা, দেশীয় ফ্যাক্ট-চেকিং টুলস তৈরি, ডিপফেক প্রতিরোধে এআই-ভিত্তিক সল্যুশন গবেষণা পরিচালনা এবং সামরিক ও বেসামরিক শিক্ষায় মিডিয়া জ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য যে, সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, বাংলাদেশ-এর উপাচার্য, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ। এছাড়া, অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুফি মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন, এসইউপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি এবং অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ, এমআইএসটি প্যানেল আলোচক হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

আরও পড়ুন: নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ

সেমিনারের আলোচনায় বক্তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও অপতথ্যের প্রভাব বিশ্লেষণ করতঃ তা মোকাবিলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তারা উল্লেখ করেন যে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অপতথ্য ও গুজব মোকাবিলা করতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন এবং সচেতনতামূলক শিক্ষার মিশ্রণ অপরিহার্য। সমাজে অপতথ্য ও গুজবের প্রভাব মোকাবিলায় এর কৌশল, পদ্ধতি ও লক্ষ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা অর্জন করে সক্রিয় ও বহুমাত্রিক সমাধানের ওপর জোর দেওয়া হয়। সামরিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমানে একটি কৌশলগত ঝুঁকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মর্মে আলোচনায় তুলে ধরা হয়। যা মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। সেমিনারটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য তথ্যক্ষেত্র তৈরির বিষয়ে সামরিক ও বেসামরিক প্রাঙ্গণে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে পদক্ষেপ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে প্রতীয়মান।