ছাত্রদল-ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির প্রবেশ নিষিদ্ধ
হবিগঞ্জের কলেজে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ঘোষণা
হবিগঞ্জের শচীন্দ্র ডিগ্রি কলেজে ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। জেলার বানিয়াচং উপজেলার নাগুড়া এলাকায় অবস্থিত ওই কলেজের প্রধান প্রবেশদ্বারে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীরা একটি ব্যানার টাঙিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানায়।
ব্যানারে লেখা ছিল—“ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের প্রবেশ নিষিদ্ধ।” বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় স্পিডবোট-নৌকা সংঘর্ষে ৪ জন নিখোঁজ, আহত ৩
কলেজ গভর্নিং বডির সদস্যরা, শিক্ষক ও স্থানীয় ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা শিক্ষার্থীদের পদক্ষেপের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, কোনো ছাত্র সংগঠন যদি কমিটি গঠন করেও থাকে, তাদের কার্যক্রম অবশ্যই ক্যাম্পাসের বাইরে পরিচালিত হবে।
কলেজের ইতিহাস ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা সম্পর্কে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী প্রয়াত শচীন্দ্র লাল সরকার কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে কলেজটিতে তিনটি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। কলেজে প্রায় ৩,৫০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ে এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম কলেজ হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুন: শশুর বাড়ি যাওয়া হলো না মৌমিতার!, বাড়িতে শোকের মাতম
কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি আইনজীবী মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ শাহীন বলেন, “প্রতিষ্ঠাতা কলেজটিকে রাজনীতি-নিরপেক্ষ হিসেবে স্থাপন করেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে এ কলেজ রাজনীতিমুক্ত রয়েছে। আমরা চাই, ভবিষ্যতেও তা বজায় থাকুক। কোনো ছাত্রসংগঠন যদি কমিটি গঠন করে, তাদের কার্যক্রম অবশ্যই ক্যাম্পাসের বাইরে পরিচালিত হবে।”
স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসীও শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। তারা বলেন, ছাত্ররাজনীতির কারণে ক্যাম্পাসে মারামারি বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার শঙ্কা থাকে। তাই ছাত্ররাজনীতি ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাই উত্তম।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান বলেন, “কলেজটিতে আমরা আমাদের কমিটি দিয়েছি। কিন্তু যেহেতু সবাই এটিকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে চান, তাই আমরা কমিটিকে কোনো মিছিল-মিটিং না করার নির্দেশনা দিয়েছি। শুধুমাত্র সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় আমরা এগিয়ে যাব।”
এছাড়া জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম সোহাগ বলেন, “শচীন্দ্র লাল রায় এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শুধুমাত্র শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। আমরা তার রাজনীতিমুক্ত কলেজ রাখার ইচ্ছাকে সম্মান করি।”
