বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু, আহত অর্ধশত
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আবিদ (২৫) নামে এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের অফিসে ভাঙচুর, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়াসহ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে গৌরীপুর সরকারি কলেজ হোস্টেল মাঠে বিএনপির আয়োজিত সভা ঘিরে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: জিয়াউর রহমান দেশ থেকে বাকশাল দূর করেছিলেন: ড. মঈন খান
স্থানীয় সূত্র জানায়, ধানের শীষের প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন ও মনোনয়ন বঞ্চিত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। রোববার উভয় পক্ষই ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করে। বিকেলে অনুষ্ঠান চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশীষ কর্মকার বলেন, “হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আবিদ নামে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।”
আরও পড়ুন: কাপাসিয়ার দূর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত
ঘটনার পর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ ভাঙা মঞ্চে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ৪-৫ হাজার নারী নিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলছিল। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসাইনের নির্দেশে আমাদের ওপর অর্তকিত হামলা চালানো হয়। এতে আমার স্ত্রী সাইদা মাসরুরসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল, চেয়ার, টেবিলসহ সব কিছু ভাঙচুর করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “একজন ছাত্রদল নেতা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। সেই মৃত্যুকে আমাদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে।”
অন্যদিকে, ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসাইন গ্রুপের নেতারা স্থানীয় এক হোটেলে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুল ইসলাম খান শহীদ জানান, “শুক্রবার রাতে যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম পাপ্পুর অফিসে হিরণের ভাইদের নেতৃত্বে হামলা হয়। শনিবার রাতে ৩৪টি রামদাসহ চারজনকে সেনাবাহিনী আটক করে। এরপর হিরণ গ্রুপ অস্ত্রসজ্জিত হয়ে আমাদের সমাবেশে হামলা চালায়।”
তিনি অভিযোগ করেন, “পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলী আকবর আনিছের বাসায়, রমজান হোসেন জুয়েলের অফিসে, যুবদল ও ছাত্রদলের কার্যালয়ে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়। এমনকি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।”
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে।





