মিয়ানমারে জেডখনিতে ভূমিধসে ২৫ মরদেহ উদ্ধার

মঙ্গলবার মিয়ানমারের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনিয়ন্ত্রিত জেডখনিতে ভূমিধসের পর উদ্ধারকারীরা ২৫টি মরদেহ উদ্ধার করেছেন এবং ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জরুরি কর্মীরা জানিয়েছেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যার সম্মুখীন হয়েছে এবং এরই একপর্যায়ে গত রবিবার উত্তর কাচিনের হাপাকান্ট শহরের বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভূমিধসের এই ঘটনাটি ঘটে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মামলা, হতে পারে ৩০ বছরের কারাদণ্ড
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে জেড মাইনিং বেশ লাভজনক একটি ব্যবসা। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত এই শিল্পটি বেশ ঘন ঘন শ্রমিকের মৃত্যুতে জর্জরিত। ২০২০ সালের ভূমিধসের পর একই এলাকায় ১৭০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার একজন উদ্ধারকর্মী এএফপিকে বলেছেন, আমরা আজ মোট ২৫টি মৃতদেহ পেয়েছি। তবে এখনও ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং নিখোঁজ এসব মানুষকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা বুধবারও অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন চুক্তি নিয়ে পুতিনের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ট্রাম্প, জেলেনস্কির উপস্থিতি নিয়ে নতুন তথ্য
উদ্ধারকারীদের মতে, খনির খননের ফলে প্রায় ১৫০-১৮০ মিটার (৫০০-৬০০ ফুট) উঁচু মাটির একটি বিশাল স্তূপ প্রচণ্ড বৃষ্টির পর আলগা হয়ে যায় এবং ধসে পড়ে। অবশ্য বর্ষাকালে খনির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল। তবে ভূমিধসে আটকা পড়া ব্যক্তিরা স্থানীয় বাসিন্দা এবং কাদা থেকে মূল্যবান কিছু পাওয়ার আশায় তারা সেখানে গিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চালীয় প্রদেশগুলো প্রাকৃতিক সম্পদে খুবই সমৃদ্ধ। স্বর্ণ ও মূল্যবান পাথরের বেশ কয়েকটি খনি ও দামি কাঠ রয়েছে এখানকার অরণ্যগুলোতে। কিন্তু এই সম্পদের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ কার্যত প্রায় নেই। খনিজ ও বনজ সম্পদ আহরণে প্রায় কোনও সরকারি নির্দেশনা মানা হয় না।
ক্ষমতাসীন জান্তা এবং জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আয়ের বড় একটি উৎস কাচিন ও অন্যান্য উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর খনিজ ও বনজ সম্পদ বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ। খনি ও অরণ্যের দখল নিয়ে সরকারি ও জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রায়ই সংঘাত হয়ে থাকে।
এছাড়া খনি এলাকাগুলোতে বর্ষাকালে কার্যক্রম ও আকরিক উত্তোলনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মিয়ানমারে। কিন্তু অধিকাংশক্ষেত্রে সেই নির্দেশনা মানা হয় না। ফলে প্রতি বছরই বর্ষাকালে খনি দুর্ঘটনায় দেশটিতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে থাকে।