প্রকৌশলী হানিফ মোহাম্মদ মুর্শিদীর অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখবে কে
ঢাকা জেলার দোহার ও সাভার উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে এলজিইডির প্রকৌশলী হানিফ মোহাম্মদ মুর্শিদী ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ না করে অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ এবং ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার এলজিইডি ও রাজস্ব তহবিলভুক্ত একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব প্রকল্পের বিপরীতে কাজ সম্পন্ন না করেই কোটি কোটি টাকার বিল উত্তোলন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এবার জনগণই সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবে: সালাহউদ্দিন আহমদ
প্রতিটি প্রকল্পে পিআইসি (২০ লাখ টাকা) ও আরএফকিউ (১০ লাখ টাকা) স্কিমের নামে প্রকল্প গ্রহণ করে উপজেলা পরিষদের রেজুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরে এসব প্রকল্পে সংশোধিত প্রাক্কলনের মাধ্যমে ১০%-১৫% অপ্রয়োজনীয় আইটেম দেখিয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার দরপত্রের মধ্যে ১৫ কোটি টাকার অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া, আরএমসি ঢালাই কোম্পানির মাধ্যমে কমিশন নিয়ে নিম্নমানের ঢালাই করা এবং ইউনিব্লক ও কার্বস্টোনের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে রাস্তাগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে জাপানে ১ লাখ দক্ষ কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা
দোহার উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে উপজেলা প্রকৌশলী হানিফ মুর্শিদী ও তার সহযোগী উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রাজিব হোসেনের বিরুদ্ধে পিআইসি প্রকল্পের বিপরীতে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, দোহারের উপজেলা পরিষদ ভবন ও ডরমেটরি নির্মাণে অগ্রিম কমিশনভিত্তিক ঠিকাদারি প্রদানের কারণে কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের হয়েছে।
হানিফ মুর্শিদী দোহার উপজেলা প্রকৌশলী থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে কেউ মুখ খুলতে পারেননি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে আগস্ট ২০২৪-এর পর তিনি রাজনৈতিকভাবে অবস্থান পরিবর্তন করে বিএনপি সমর্থক হিসেবে পরিচিত হন।
অন্যদিকে, উপসহকারী প্রকৌশলী রাজিব হোসেনের স্ত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা টিমে কর্মরত থাকায় তিনি গণভবনের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার করতেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বর্তমানে সাভার উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে প্রকৌশলী হানিফ মুর্শিদী কার্যাদেশ প্রদানের আগে ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৫% কমিশন নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কাজের লে-আউটের সময় অপ্রয়োজনীয় আইটেম যুক্ত করে সংশোধিত প্রাক্কলনের মাধ্যমে অতিরিক্ত ১৫% অর্থ আত্মসাৎ করার তথ্যও পাওয়া গেছে।
দোহারের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে পলাতক ঠিকাদারদের কাজের বিপরীতে অগ্রিম বিল প্রদান করা হলেও সেই অর্থ রিকভার করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী হানিফ মোহাম্মদ মুর্শিদী বলেন, “এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি সাভারে মাত্র তিন মাস ছিলাম, তাও জুন মাস পাইনি। তিন মাস সময়কে আমরা হিসাবেও ধরি না। তাছাড়া আমি বিএনপি করি, ভয় পাই না, যা খুশি লিখুন।”
তবে স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, অভিযোগের পেছনে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এলজিইডির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা।





