সমভোটে লটারি নয় পুনরায় নির্বাচন : আরপিও সংশোধনে যেসব পরিবর্তন করা হয়েছে

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৪ অপরাহ্ন, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২:৪৯ অপরাহ্ন, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সোমবার নতুন করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) জারি করেছে সরকার। এতে একাধিক বিধান সংশোধন ও নতুন কিছু ধারা যুক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় দশক পর ‘না ভোট’ পুনর্বহাল করা হয়েছে এবং ফেরারি আসামিদের প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।

নতুন আরপিও অনুযায়ী, আদালত ঘোষিত ফেরারি বা পলাতক আসামি ভোটে অংশ নিতে পারবেন না। একই সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী পদে থেকে প্রার্থী হওয়ার সুযোগও বাতিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: কপ সম্মেলনে সব মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

এছাড়া, ‘না ভোট’ পদ্ধতি যুক্ত হয়েছে একক প্রার্থীর আসনে। যদি কোনো আসনে একমাত্র প্রার্থী থাকেন, তবে ব্যালটে থাকবে ‘না ভোট’-এর অপশন। তবে দ্বিতীয়বার নির্বাচনেও যদি একক প্রার্থী থাকেন, তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।

আরপিওতে যুক্ত ও সংশোধিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা:

আরও পড়ুন: তিন রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

* সমভোট হলে লটারির পরিবর্তে পুনঃভোট অনুষ্ঠিত হবে।

* মনোনয়নপত্রের জামানত বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে (আগে ছিল ২০ হাজার)।

* জোটগত নির্বাচনেও প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে।

* আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হয়েছে, যার আওতায় প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবী ও বন্দিরা ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন।

* হলফনামায় অসত্য তথ্য দিলে নির্বাচনের পরও ব্যবস্থা নিতে পারবে ইসি।**

* আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান যুক্ত হয়েছে, যা দলীয় পর্যায়েও প্রযোজ্য।

* আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

* ভোটকেন্দ্রে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ ও ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকার সুযোগ যুক্ত করা হয়েছে।

* এআইয়ের অপব্যবহার, অপতথ্য ও গুজব ছড়ানোকে নির্বাচনি অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

* অনিয়ম প্রমাণিত হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা পাবে।

নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ইভিএম সংক্রান্ত ধারা বাতিল করা হয়েছে।

নির্বাচনি ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা ভোটার প্রতি ১০ টাকা এবং মোট ব্যয় ২৫ লাখ টাকার বেশি নয়—এমন বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া অনুদান গ্রহণের বিস্তারিত তথ্য দলগুলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।

নতুন আরপিওর আলোকে এখন দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে নির্বাচনি আইনের সংস্কার কার্যক্রম শেষ হলো। এর আগে ভোটার তালিকা আইন, নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ও পর্যবেক্ষক নীতিমালাসহ সব সংশ্লিষ্ট বিধান সংশোধন সম্পন্ন হয়েছে।