জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকারের সুযোগ, জেদ্দায় প্রাথমিক নিবন্ধনে কম সাড়া
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রথমবারের মতো বিদেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে। এর ফলে প্রবাসীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
তবে সৌদি আরবের বন্দর নগরী জেদ্দায় এই উদ্যোগের প্রতি প্রবাসীদের সাড়া এখনো আশানুরূপ নয়। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে প্রায় ৩৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত থাকলেও, এখন পর্যন্ত মাত্র ২,৫০০ জন ভোটার হিসেবে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।
আরও পড়ুন: জোহরান মামদানির ট্রানজিশনাল টিমের সদস্য হলেন ফরহাদ মাজহারের কন্যা সমতলী হক
প্রবাসী ভোটারদের অভিযোগ, প্রাথমিক নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নানা কারিগরি ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিশেষ করে প্রত্যয়নপত্রের প্রয়োজনীয়তা প্রবাসীদের জন্য জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নোয়াখালী সমিতি জেদ্দার সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, “ভোটার হতে হলে অন্য তিনজন নিবন্ধিত ভোটারের কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিতে হয়, যা প্রবাস জীবনে অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়।”
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় ১৭৪ বাংলাদেশিসহ ৪৬৮ অভিবাসন প্রত্যাশী আটক
সৌদি আরব বিএনপির আহ্বায়ক আহমেদ মুকিত বলেন, প্রবাসীদের বিপুল ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে, তবে নিবন্ধনের শর্তাবলী সহজ করা জরুরি।
ইনভেস্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব হাজী সালাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “বর্তমানে যে নিয়ম আছে, তাতে অনেক প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করতে পারবে না। পাসপোর্টের ভিত্তিতে প্রক্রিয়া সহজ করা হলে প্রবাসীরা উপকৃত হবে।”
অন্যদিকে, জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসীরা যাতে নিবন্ধন কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন, সেজন্য কনসুলেট সবধরনের সহযোগিতা করছে। তারা ফর্ম পূরণে সহায়তা, তথ্য সরবরাহ ও প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।
প্রবাসীরা মনে করেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইন বা ডিজিটাল নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করা গেলে নিবন্ধনের হার বৃদ্ধি পাবে। জেদ্দায় কর্মরত সফটওয়্যার প্রকৌশলী মুকবুল হোসেন বলেন, “সব প্রক্রিয়া অনলাইনে হলে আমরা সহজে নিবন্ধন করতে পারতাম। বর্তমানে কাজের চাপে কনস্যুলেটে যাওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ আরও গণমুখী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে। এক কোটি প্রবাসী ভোটারের অংশগ্রহণ দেশীয় নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এজন্য প্রবাসীদের আগ্রহ বৃদ্ধি, প্রচারণা জোরদার করা এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজীকরণ এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।





