ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুর পাশে নেই বাবা, একা সংগ্রাম করছেন মা
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ক্যান্সারে আক্রান্ত চার বছরের শিশু মর্তুজা আলী ভূঁইয়া। যার এই বয়সে পৃথিবীর আলো এবং খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকার কথা। আজ সেই মর্তুজা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
সন্তানকে বাঁচাতে ওই শিশুর মা শিল্পী রানী আকুতি করলেও কোনো খোঁজখবর নেন না শিশুটির বাবা নুর আলম ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে ৩০ ফুট গভীর পাইপে আটকা ২ বছরের শিশু, চলছে উদ্ধারের চেষ্টা
মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত মর্তুজার মা শিল্পী রানী বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সাত মাস আগে শিশু মর্তুজা আলী ভূঁইয়ার ডান চোখে একটি টিউমার ধরা পড়ে। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে মর্তুজার চোখের অপারেশন করা হয়। পরে ওই চোখেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে।
তিনি আরও বলেন, পাঁচ বছর আগে এলাকার কাসেম মিয়ার ছেলে নুর আলমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে ঘর আলো করে আসে সন্তান মর্তুজা আলী ভূঁইয়া। তবে অসুস্থ সন্তানকে রেখে তার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেছেন। একদিনও খোঁজখবর নেন না।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় এনামূল হক পলাশের ‘জনগণের ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা’র গ্রন্থালোচনা
শিল্পী রানী জানান, তিনি একটি সুয়েটার কারখানায় চাকরি করতেন। তবে সন্তানের সেবা-যত্ন নেওয়ার জন্য চাকরিটিও ছেড়ে দিতে হয়েছে। এদিকে ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আড়াই লাখ টাকা ধার দেনা হয়ে গেছে। এখন চিকিৎসা করাতে না পেরে তিনি মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন ৭ থেকে ৮ বার কেমোথেরাপি নিতে হবে। এজন্য প্রতিবার ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে। এই অর্থ যোগাড় করতে তিনি এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সন্তানের জন্য সরকারিভাবে ও বিত্তশালীদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, অন্যান্য শিশুরা স্বাভাবিকভাবে খেলাধুলা করলেও মর্তুজা সেভাবে খেলাধুলা করতে পারে না। মর্তুজার মা শিল্পী রানীর কোনো আয় না থাকায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। প্রথম দিকে ধার দেনা করে চিকিৎসা চালালেও এখন একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এখন একমাত্র শিশু সন্তানকে বাঁচাতে সকল শ্রেণী–পেশার মানুষকে শিল্পীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তারা।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মর্তুজাকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। সরকারিভাবেও আরও সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব।





