পাকিস্তানের সঙ্গে স্থগিত, বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি নিয়ে নতুন করে ভাবছে ভারত

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:২০ অপরাহ্ন, ২৭ জুন ২০২৫ | আপডেট: ৮:০৫ পূর্বাহ্ন, ১২ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে ২০২৬ সালে। এর আগেই চুক্তিটির শর্তাবলী পর্যালোচনা ও ভারতের স্বার্থ অনুযায়ী নতুন কাঠামোতে চুক্তি নবায়নের পরিকল্পনা করছে নয়াদিল্লি। 

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনোমিক টাইমস।

আরও পড়ুন: সারাদেশে পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা ও সেনা সদস্যরা সতর্ক অবস্থায়

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবার নিজেদের ‘স্বার্থ অনুযায়ী’ নতুন চুক্তি করার ব্যাপারে ভাবছে নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদ পানি চুক্তি বাতিলের পর বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান গঙ্গা চুক্তির একাধিক বিকল্প অথবা এটিতে সংযোজন-বিয়োজনের ব্যাপারে ভাবছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। 

মূলত, ফারাক্কায় পানি বন্টন নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল সেটি নিরসনে ৩০ বছর আগে এ চুক্তিটি হয়। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টনের একটি কাঠামো তৈরি করেছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে উজানের দেশ ভারত ভাটির দেশ বাংলাদেশকে কথা দেয় যে ফারাক্কা বাঁধে পানি সরবরাহ ঠিক রাখবে তারা। এই বাঁধটি তৈরি করা হয়েছে বাঘিরথি নদীতে। যা বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

আরও পড়ুন: রাজধানীর সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার

২০২৬ সালে শেষ হয়ে যাচ্ছে গঙ্গার পানি বণ্টন বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটির মেয়াদ। তাই এখন নতুন করে চুক্তির বিষয়টি সামনে আসছে, যেখানে নতুন চুক্তির ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমঝোতার প্রয়োজন। ভারত সম্পূর্ণ নতুন একটি চুক্তি নিয়ে ভাবছে যেখানে তাদের ‘বর্তমান উন্নয়নমূলক বিষয়াবলীর’ বিষয়টি থাকবে।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে ভারত ফারাক্কা ব্যারাজ চালু করে। এর মাধ্যমে গঙ্গা থেকে পানি হুগলি নদীতে সরিয়ে নেওয়া হয়, যাতে কলকাতা বন্দর সচল রাখা যায়। বাংলাদেশের অভিযোগ, এই বাঁধের কারণে পদ্মা নদীতে পানিপ্রবাহ কমে গিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মরুকরণের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। চাষাবাদ, মৎস্য খামার ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের ইন্দুস চুক্তি কার্যত বাতিল করে দেওয়ার পর ভারতের এই সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার পানি কূটনীতিতে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নতুন চুক্তি হলে সেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে কি না, তা নিয়েই এখন আলোচনা।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে দুই দেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) ভবিষ্যৎ বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।