সাঘাটায় পুলিশের ধাওয়ায় পানিতে ডুবে শিবিরকর্মীর মৃত্যু, ওসিকে গ্রেপ্তারের দাবি

গাইবান্ধার সাঘাটা থানার চত্বরে পুলিশের ধাওয়ায় পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে শিবিরকর্মী সিজু মিয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন এই মৃত্যুকে ‘হত্যা’ আখ্যা দিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করছেন।
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে সিজু মিয়া থানাসংলগ্ন একটি পুকুরে ঝাঁপ দিলে সেখানে পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে মারধর করেন। গুরুতর আঘাতে সিজু মিয়া পানিতেই মৃত্যুবরণ করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাউফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী বাস উল্টে পুকুরে, আহত ১০
সারা রাত তাকে পানি থেকে উদ্ধার না করে পরদিন শুক্রবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে। স্বজনদের দাবি, মৃত্যুর সময়ও সিজুর শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল, যা মারধরের প্রমাণ বহন করে।
ঘটনার পরপরই স্থানীয়ভাবে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ এবং ঘেরাও কর্মসূচি এখনো অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে কমেন্ট করা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত
শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় গাইবান্ধার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকালে সাঘাটার বোনারপাড়া উপজেলা চত্বরে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’-এর আয়োজনে এক প্রতিবাদ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন সাঘাটা ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক এনামুল হক সরকার, যুবদল নেতা ইখতিয়ার আহম্মেদ সুজন, ছাত্রশিবির থানা সভাপতি সাজেদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন সাঘাটা থানা শাখার সেক্রেটারি সুরুজ্জান, সচেতন নাগরিক কমিটির নেতা গোলাম রাব্বি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “সিজু যদি কোনো অপরাধ করে থাকে, তবে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা যেত। কিন্তু পুলিশ বর্বরোচিতভাবে তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।”
স্বজন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দাবি, এ ঘটনায় সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলমসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
সূত্র: ইউএনবি